Monday, February 18, 2008

ধর্মনিরপেক্ষতা, আহমদ শরীফ, ও ব্লগার

অন্য এক ব্লগারের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে পোস্ট থেকেই এই পোস্ট দেওয়ার ইচ্ছার জন্ম। ঐ ব্লগার আহমদ শরীফ কোন এক বক্তৃতা থেকে উদ্দৃতি দিয়ে বলেছেন যে ধর্মনিরপেক্ষতা আসলে ধর্মহীনতাই বুঝায়। এই কথার জবাব আসলে অনেক ভাবেই দেওয়া যায়... ১। আহমদ শরীফ ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কিত সবকিছুর জাজক নন। তিনি যা বলবেন তা ই সবাইকে মানতে হবে, সেটা উনি নিজেই মনে করেন না - আর আমাদের তা মনে করার তো আরো কোন কারন নেই।২। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে এই দুনিয়ায় অনেকেই অনেক কথা বলেছেন - সবই তো আর ঠিক না, এবং সব কথা সব যায়গায় প্রযোয্যও না। পরিপ্রেক্ষিত বুঝতে হবে এবং তারপরই যে কোন concept এর মুল্যায়ন করত হবে।ধর্মকে নিয়ে এক এক জন এক এক রকমের চিন্তা করেন। কেউ কেউ হলেন professed atheists, আবার কেউ agnostics, কেউ আবার spiritual আর মনে করেন ধর্ম আসলে সীমাবদ্ধ করে দেয়, কেউ বা বিশ্বাস করেন আবার কেউ বা বলেন এটা ব্যক্তিগত ব্যপার। অনেকেই আবার বলেন এটা একটা social phenomenon। কেউ মনে করে শুধু মাত্র একটা ধর্মই শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতে পারে, আবার অনেকে মনে করেন সব ধর্মই আসলে একই কথা বলে। অন্য দিকে আরো কিছু মানুষ আছেন যারা মনে করেন সব ধর্মই বাজে।এই positions গুলোর সবই religio-philosophical position। কিছু কিছু arguments এর যৌক্তিক ভিত্তি আছে, আবার অনেকের ভিত্তিটা হল বিশ্বাসে যা নাকি যুক্তি-তর্কের ধার ধারে না। এই যুক্তি-তর্কের পরিধি যেমন academic আবার তেমনি non-academic হতে পারে, কিন্তু সেটা political হবে কি না, সেখানে রাষ্ট্র নাক গলাবে কিনা, সেই সব ব্যপার address করার জন্যই আমরা "secularism" কথাটা নিয়ে আজ বসেছি... দেখি অপারেশন করে কি বের হয়।এই যদি হয় মানুষজনের অবস্থা, তাহলে এই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কি করা উচিত? এই রাষ্ট্রেই তো ঐ সব মানুষগুলো থাকে একসাথে। ঘটনাটা সম্পূর্নই অন্যরকম হল যদি এক এক টা রাষ্ট্র শুধু মাত্র একটা ধর্মের মানুষ নিয়েই গঠিত হত। তাছাড়া, মানুষের বিশ্বাসের ধরন-ধারন যে কত রকম হতে পারে তার তো কোন exhaustive লিস্ট আমি দেই নি! আমার কাছে মনে হয় - আমার উল্লেখ কথা পজিশন গুলার যে কোন একটা পজিশন যদি রাষ্ট্র নেয়, তাহলেই সে অন্য সব মানুষকে তার ছাতার তলে যায়গা দিতে পারবে না। অথচ, আমার চিন্তায়, রাষ্ট্রকে সকল ধর্মাবলম্বীদের accommodate করতে পারা উচিত তাদের ঐ differing points of views সহ। কিন্তু কেমন করে?Well. রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে সেকুলারিজম চর্চা করে। রাষ্ট্র যদি ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তাহলে আমরা খুব সহজেই এই সব তর্ক বিতর্ক এড়িয়ে যেতে পারব। কে কোন ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী সেটা জানার বা সেই অনুযায়ি তার সাথে oppressive/repressive ব্যবহার করার প্রশ্নই উঠবে না। রাষ্ট্রের তো জানার দরকার নেই আমি সৃষ্ঠিকর্তার ব্যপারে কি মনে করি! অনেকেই মনে করতে পারেন "secularism" ব্যপারটা anti-religion. আমাদের কথায় অনেক সময় সেই রকম ভাব ভঙ্গি ফুটে উঠে - কেউ বলেন ইসলামই শ্রেষ্ঠ, আবার কেউ বলেন বিজ্ঞান ই মুক্তি... এই রকম অবস্থায় দেখা যায় যারা সেকুরালিজমের কথা বলেন তাদের কে ঐ বিজ্ঞান মনস্ক anti-religion গোত্রে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু, অন্য ভাবে চিন্তা করলে (আমি যেমন টা করছি...) দেখা যাবে, এই concept টা আসলে যদি কিছুই হয়ে থাকে, তাহলে সেটা more pro-religion than anti- religion. কেমন করে? সেকুলারিজম মানুষকে তার নিজস্ব ধর্মীয় আচার-অনুচার practice করার সুযোগ করে দেয় এবং অন্য কোণ ধর্ম যদি অন্য ধর্মের প্রতি oppressive হয়ে পড়ে, তাহলে সেই oppressive ধর্মকে তা করা থেকে বিরত রাখারও ব্যবস্থা করে দিতে সাহায্য করে। কিভাবে এক ধরনের ধর্মীয় অনুশাসন অন্য ধর্মের প্রতি oppressive হয়ে যেতে পারে তার উদাহরন সারা পৃথিবীতে হাজারোটা আছে, আর আমাদের দেশের কথাতো বাদ ই দিলাম।অথএব, আমি চাই "secularism", এই কারনে নয় যে আমি ধর্ম ব্যপারটাই ভাল মনে করি না বা আমাদের ক্ষেত্রে ইসলামকে খারাপ মনে করি। বরং এই জন্য যে, এটা ধর্মকে preserve করতে সাহায্য করে। শুধু ইসলাম না, বরং সকল ধর্মই এই সেকুলারিজম এর আওতায় এক ধরনের রাষ্ট্রীয় protection পায়। Pre-enlightenment Christian যুগে ইউরোপে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে persecute করা হত - গ্যালিলিও গ্যালিলি শুধু একটা উদাহরন। Taliban style সরকার কিভাবে oppressive হতে পারে অন্য ধর্মের মানুষদের কাছে বা অন্য মুসলিমদের কাছেও যারা নাকি তাদের আদর্শে বিশেয়াস করে না তা তো আর বলে দেওয়ার দরকার নেই। জামাতী নেতৃত্ব কিভাবে কিছু মানুষের সর্বনাশ করতে পারে সেটাও আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু এই সন আমরা খুব সহকেই এড়িয়ে যেতে পারি যদি সরকার বা রাষ্ট্র সেকুরালিজমের চর্চা করে এই ধর্মীয় ব্যপারে বা ধর্ম আর রাষ্ট্রের সম্পর্কের ব্যপারে।অথএব, সারমর্ম হল, রাষ্ট্র ও ধর্ম থাকবে আলাদা। এতে করে রাষ্ট্র ও ধর্ম দুইএরই ভাল হবে। দুটোকে মিলিয়ে ফেল্লেই শুরু হবে দ্বন্দ্বের, ভুলবুঝাবুঝির, oppression এর, আধ্যাতিকতার গলাচাপা দেওয়া হবে, গলা চাপা দেওয়া হবে একই ভাবে মুক্তবুদ্ধি চর্চার। এর শেষ হবে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়েই। আমার মনে হয় - এখানেই মানবতাবাদ আর ধর্মীয় মতবাদ একই কথা বলে - তারা সকলেই চায় শান্তি।